25 Feb 2025, 09:04 pm

অরুণাচল নিয়ে চীন-ভারত বিরোধ উস্কে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে আমেরিকা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সম্প্রতি মার্কিন সেনেটের দুটি দলের উদ্যোগেই অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে স্বীকৃতি দিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।

ফলে ভারত-চীন সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন মার্কিন সেনেটের এ প্রস্তাবের উদ্দেশ্য হল ভারত – চীন সীমান্ত বিরোধ ব্যাপক মাত্রায় উস্কে দিয়ে কোয়াড চুক্তির আওতায় চীনকে সবদিক থেকে ঘেরাও করে ফেলা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো তথা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটাই চাচ্ছে।

ওদিকে অকুস (AUKUS ) চুক্তি করে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে তিনটি পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন হস্তান্তর করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক শক্তিতে রূপান্তরিত করবে এবং অস্ট্রেলিয়াও দক্ষিণ চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে চীনকে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের উত্থান, ইরানের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা-মার্কিন- ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ জোট জোরদার হওয়া, চীনের ক্রমবর্ধমান ব্যাপক প্রভাব , ইরান-চীন চুক্তি , চীনের মধ্যস্থতায় ইরান-সৌদি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃ প্রতিষ্ঠার চুক্তি , ইসরাইলের নাজুক অবস্থা ও ভঙ্গুর দশা, ইয়েমেনের ওপর সাত বছরের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীলনক্সার বানচাল ও ভণ্ডুল হওয়া, ঠিক একই ভাবে সিরিয়া, ইরাক, লেবানন ও আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের ব্যর্থতার মত নানা কারণে এ অঞ্চলে মার্কিন শক্তি ও ন্যাটোর উপস্থিতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এর পাশাপাশি ইরান-চীন-রাশিয়ার সমঝোতা ও সহযোগিতার ত্রিভুজ এবং সাংহাই – ইউরেশিয়ান জোটের উত্থান ইত্যাদি বিশ্বে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা আধিপত্য ও প্রভাবকে খর্ব করতে পারে। এ ছাড়াও ইউক্রেন সংকট পশ্চিমা অর্থনীতির মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যার বাস্তব দৃষ্টান্ত হচ্ছে গত কয়েক দিনের মধ্যে চার বৃহৎ মার্কিন ব্যাংকের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা।

তাই অত্যাসন্ন সংকট কাটিয়ে উঠতে কোয়াডের খোয়াড়ে চীনকে আটকানোর পাশাপাশি সাংহাই ইউরেশিয়ান জোটকে নিষ্ক্রিয় বা অকার্যকর করতে এবং মধ্যপ্রাচ্যে চীনের প্রভাব ও উপস্থিতিকে দুর্বল করার জন্য ভারত-চীন বিরোধকে নতুন করে তীব্রভাবে উস্কে দেওয়ার পায়তারা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রয়েছে ব্রিটেন ও তার লেজুড় শক্তিগুলো তথা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। বিশ্বের ওপর আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে এই দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রে অরুণাচল কেন্দ্রিক ভারত-চীন বিরোধ ও সংঘর্ষ বাধলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন। বিশেষ করে এ অঞ্চলের কোনো দেশ যদি মার্কিন শিবিরে যোগ দেয় তাহলে তা দেশটির জনগণের জন্য মহাদুর্যোগ সৃষ্টি করতে পারে।

তারা আরও মনে করেন ভারত ও চীনের উচিত নিজেদের বিরোধ নিজেদের সমাধান করা এবং বিদেশী বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এ ক্ষেত্রে সুযোগ না দেওয়া।ওই পর্যবেক্ষকরা বলছেন কোয়াডের মতো চুক্তি ও জোট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমস্যা কেবল বাড়িয়েই দিচ্ছে । মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনীতি ও সমাজ অস্তাচলে যাচ্ছে। তাই এ মহাসংকট থেকে উদ্ধার পেতে পশ্চিমারা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইউক্রেন সংকটের মত নতুন নতুন সংকট তৈরি করবে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা!!

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 7790
  • Total Visits: 1648352
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1714

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ মঙ্গলবার, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
  • ২৬শে শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৯:০৪

Archives